Categorisation Narrows the Glory of Creation. A composition of prose miscellany. প্রকাশক : প্রতীতি। প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারি ২০০৩।

Monday, January 28, 2008

পায়ে এসে ঠেকে অদৃশ্য মৌলকণা-- কুয়াশার হাড়গোড়

গুহাজাত অন্ধকারের একটা মাঝারি টুকরো হামাগুড়ি দিয়ে এসে সদর রাস্তায় পড়তেই, বায়ুসমুদ্রে বিরাজিত শুষ্ক কণাসমূহ, স্পঞ্জের মতো শুষে নিয়ে গোটা পৃথিবীটাকে গাবগাছের ছায়ার মতো কালো করে দিল, মেঘের আড়ালে যৌবনের অমিত তেজে সে তখন খেলছিল, একাদোক্কা, সখিগণ সহযোগে, তবু স্বপ্ন গোপন করে বাহ্য উন্মাদনায় যদিও সে হাসছিল, প্রকৃতপক্ষে তার তখন অস্তিত্ব জুড়ে বেরিয়ে পড়ার তাগিদ, বাড়ি বাড়ি ফেরি করে আলো বেচাকেনা, পায়ের নিচে তিলধারী সে, সুর ভাজতে জানে, তার সুরের মদিরা গন্ধে তেপান্তরের ঘাসে মূর্ছিত হয়ে কতজন বুকে বিঁধায়েছে বেদনার শল্য... কেউ সিফিলিস... কেউ ট্রাম... সে জানে, তাই আদিখ্যেতা রেখে, থুতনিতে হাত ঠেকিয়ে বরফ চূড়ায় বসে যায় ভাবনাব্যাপদেশে, সখিগণ দৌড়ে গিয়ে জাপটে ধরে রূপার কলস... গায়ে মাখে নিমপাতা ছেঁচা রস... বেলফুল... অতঃপর সার বেঁধে নদীমুখো হাঁটা দেয় তারা, সঙ্গে সাম্বা নাচ নেচে সে হাঁটে, জল ছোঁয়, দিগ্বলয়ে হৈচৈ পড়ে যায় আলোর নাচনে, পাতায় পাতায় বিকিরিত রশ্মিরাজি অস্পর্শনীয় মায়াবী সুতোয় হাজারটা প্রতিফলন এঁকে, শব্দিত-স্পন্দিত প্রাণের চোখে-মুখে তড়াক করে ছুড়ে দেয় প্রীতম সম্মোহন, অতঃপর সখিগণের কলরবা ঢেউ জলের নিয়মে দিগ্বিদিকে ছড়াতে শুরু করলে, স্নানের পাট চুকিয়ে সে শাদা শাড়িতে মোড়িত হয়ে পা রাখে নিজস্ব গ্রাফে, আর পৃথিবীর সব অন্ধকার গাবগাছই তখন চালতা গাছের মতো সুন্দরী হয়ে যায়...

উন্মূল নুঁড়িপাথরে ঝঙ্কার উঠিয়ে কিছুপথ হাঁটা হলে পায়ের কাছে দূত পাঠায় মেঘের দুহিতা, কালো কঙ্কন পরা অমিত বিক্রমী বলীয়ান-যে তার মহিয়সী, কেশভারানতা, পথের পাশে লভ্য আপনার ছায়ামাঝে প্রত্যাদিষ্ট সে, অতঃপর যাবতীয় বিভারাজি ত্রস্ত লুকায়ে ফেলে, এবং গীত হবে যে সুরীয় আবেশ, তার চরণকলাদের রেওয়াজের জলঝর্ণায় ধুয়ে নিয়ে যাপন করে অবসর কাল, আর তুন্দ্রায় তখন ভরাবৃষ্টি, সে বৃষ্টিময়ী, তার চিরকাল ভরাবৃষ্টিকে গানের নিচে শয্যা পেতে বাসের মতো সুখের লাগে...

পাখিগণ নীড় থেকে গলা বাড়িয়ে দেখে ক্রমদৃশ্যমান ভেজা ও বিষণ্ন নিসর্গকে, যেনো সমুদ্রের তলদেশ থেকে পুনর্জন্ম প্রাপ্ত হচ্ছে ধরা, দৃশ্যাহতির এ পর্যায়ে অদ্ভুত এক আবাহনে প্রত্যেকের স্নায়ুর নদীতে অন্যরকম এক পুলক ছলকে ওঠে, আর তারা স্ব-স্ব দরজায় দাঁড়িয়ে কোরাসে গেয়ে ওঠে স্বাগতম...

সে হাঁটে, তার পায়ে এসে ঠেকে অদৃশ্য মৌলকণা, কুয়াশার হাড়গোড়, তবু শাদা, আহা শাদার আতিশয্যে ম্রিয়মাণ হয়ে যায় সব বাধা, তার কেননা জীবনই যৌবন, মুখিয়ে আছে যারা নিচে থেকে চাতকের প্রায়, তারা জানে, কত অনিয়ম তিতিক্ষার পর মেলে এই যৈবতি কন্যার মন...

কন্যা বর দিলে ফুল ফোটে, শাপ দিলে হুল, সেই-ই মাটি দেয় আগুন দেয়, টিপে-গড়ে তাপে-পুড়ে সোহাগী পুতুল, দেবী সেই-ই স্তন্যদাত্রী, লালন-পালন তার, সেই-ই যুগিয়ে যায় যাবতীয় খোরপোশ, সেবার মানস...

সমস্ত সৌরভ দিয়ে দেবী আমাকে ভালোবাসে, তার অপরিমেয় প্রেমের প্রবাহ আমার বিষণ্ন তালুক-এ বয়ে আনে উর্বরা পলি, আমি চাষে মত্ত হই, চাষী...

No comments: